এস কে শফিকুল ইসলাম
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা চরছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। শনিবার থেকে গত ৩ দিন ধরে রোগীদের ব্যবহৃত পানি নেই হাসপাতালে। যে কারণে নদী ও পুকুর থেকে রোগীদের স্বজনেরা পানি এনে ব্যবহার করছে টয়েলেটে। সুপেয় খাবার পানি কিনে আনতে হচ্ছে বাহির থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চরম বোগান্তি।
এ হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম নিজ কর্মস্থালে অফিস করছেন ইচ্ছা মাফিক। স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে তিনি হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে সপ্তাহের বুধবার অফিস করে কর্মস্থল ত্যাগ করে পুনরায় ফিরে আসেন রবিবার। দেখার যেনো কেউ নেই, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।
সর্বশেষ এ কর্মকতা গত সপ্তাহেও মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত নিজ কর্মস্থালে অনুপস্থিত ছিলেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তার কক্ষের মূল ফটকে ঝুলছে তালা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. শাহারিয়ার ফাত্তাহ্ বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মুজাহিদুল ইসলাম স্যার তার ছেলে অসুস্থ্য থাকায় তাকে নিয়ে ব্যাস্ত আছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের একটি পৌরসভার প্রায় ৫ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র মাধ্যম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। হাসপাতালে ডাক্তার সংকটে ২০২২ সাল থেকে অপারেশন বন্ধ, অপারেশন র্থিয়েটারে ঝুলছে তালা। শুধুমাত্র জরুরী বিভাগে ছোট-খাটো কাটা ছেড়া সেলাই ছাড়া হয়না কোন বড় ধরনের অপারেশন, এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ, আল্ট্রাসনোগ্রাম কিছুদিন চালু থাকলেও বর্তমানে রয়েছে বন্ধ। এ নিয়ে গোটা হাসপাতলে এখন হ-য-ব-র-ল অবস্থা চিকিৎসা সেবা ব্যাহত।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে মহিলা বেডে চিকিৎসাধীন ভর্তিকৃত রোগী পারুল বেগম, শিমা আক্তার, নাসিমা বেগম, প্রতিবন্ধী সুমাইয়া, রোগীর স্বজন ফারুক মল্লিক সহ একাধিক রোগীরা বলেন, টয়েলেট অপরিস্কার, দূর্গন্ধ, বদনাটাও তলা ফাটা, এগুলো দেখার কি কেউ নেই?। নিজেদের ব্যবহারের পানি নদী ও পুকুর থেকে বোতলে করে এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে। খাবার পানি তাও দোকান থেকে কিনে এনে খাচ্ছি।
এ ব্যাপারে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ব্যবহারের পানি তোলার ৩টি মটারের ২টি মটার অনেকদিন ধরে নস্ট হয়ে রয়েছে। একটি মটার দিয়ে চালু থাকলেও তাও বর্জ্রপাতে নস্ট হয়ে গেছে। বিকল্প হিসেবে রোগীদের জন্য ২টি ড্রামে সকাল বিকেল পানি রেখে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, হাসপাতালের রোগীদের সমস্যার বিষয়ে তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন। তাৎক্ষনিক বিষয়টি সমাধানের জন্য কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
এ সম্পর্কে বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মাহাবুবুল আলম বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম তার ছেলে অসুস্থ্য থাকায়। তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।