শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ন

শিরোনামঃ
মোরেলগঞ্জে লাখো ভক্তের পদচারনায় মুখরিত গোপাল চাঁদ মেলা, স্নান উৎসব মোরেলগঞ্জ প্রেমের সম্পর্কে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ মোরেলগঞ্জে ছাত্রদলের উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল… সাতক্ষীরায় রাইফেল ক্লাবে স্বাধীনতা দিবস শুটিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত। খেতেরপাড়া লৌহজংয়ে রহস্যজনক হত্যাকান্ড : গ্রাম্য চিকিৎসক মিঠু হাসানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যযন্ত্রের অভিযোগ, ঠাকুরগাঁওয়ে ‘মামলা বাণিজ্য’, ওসি শহিদুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবেন– মির্জা ফখরুল,, চন্দনাইশ প্রেসক্লাবের আহবায়ক গঠন  মাও. মোজাহেরুল কাদের আহবায়ক, সৈকত দাশ ইমন সদস্য সচিব কাজী মনিরের উদ্যোগে মোরেলগঞ্জে ঈদ বস্ত্র বিতরণ সাতক্ষীরায় তাঁতীদলের আয়োজনে দোয়া অনুষ্ঠান ও গরিব, দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে ইফতার বিতরণ ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টা ক্ষেত থেকে জীবিত কন্যাশিশু উদ্ধার

ঠাকুরগাঁওয়ের পৌরসভায় ৮ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অবৈধভাবে চলছে !

 

মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,

যেকোনো যান মানুষকে গন্তব্যে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করে। কিন্তু যান যদি গন্তব্যে সঠিক সময়ে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়, তা আরোহীকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। এমন যান সড়ক থেকে তুলে দেওয়াই ন্যায়সংগত। কিন্তু এ ভাবনা ঠাকুরগাঁও পৌর প্রশাসন আদৌও ভেবে দেখেছে কি না তা নিয়ে সন্দিগ্ধ পৌরবাসী। এই পৌরসভার ঘাড়ে চেপে বসেছে ১০ হাজারেরও বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। প্রতিদিন এগুলোর দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ যাত্রী থেকে শুরু করে পথচলতি মানুষ । ১০ হাজার অটোরিকশার চাপে ত্রাহি অবস্থা শহরবাসীর। ঘর থেকে বের হলেই ব্যাটারিচালিত এই যানের নৈরাজ্য দেখে তাদের কপালে রক্ত ওঠা অবস্থা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের প্রতি কী দায়িত্ব পালন করছে, এ নিয়ে হাজারটি প্রশ্ন তাদের মনে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২ হাজার অটোযানকে পৌর প্রশাসন ট্রেড লাইসেন্সের মাধ্যমে সড়কে নামার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে ৮ হাজারেরও বেশি এই যান অবৈধভাবে চলছে। এতে যানজট ও দুর্ভোগের শহরে পরিণত হয়েছে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা।
পৌরবাসীর ধারণা, ৮ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলার পেছনে পৌর কর্তৃপক্ষের হাত আছে। এসব যানের চলার পেছনে তাদের মৌন ও জোরাল দুটি সমর্থনই রয়েছে। এটা যদি না থাকত, তাহলে কীভাবে অবৈধভাবে চলছে এসব যান। এক দিন নয়, মাসের পর মাস। এসব যানের কারণে সব সময় লেগে থাকে যানজট। অবৈধ অটোরিকশার ভারে শহরটি স্থবির হয়ে পড়েছে। এগুলোর বেপরোয়া চলাচলে ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। এই যানের কাছে শহরবাসী জিম্মিদশায় পড়েছে। এ থেকে উদ্ধার করতে পারে শুধু পৌর প্রশাসন। কিন্তু এ নিয়ে প্রশাসন কতটা মাথা ঘামিয়েছে, তা পৌরবাসীর প্রশ্ন। প্রতিদিনই অটোরিকশার দৌরাত্ম্য বেড়ে চলছে। সড়কের এখানে সেখানে এগুলো থামিয়ে তৈরি করা হচ্ছে যানজট। এতে শহরে যান চলাচল নিয়ে বিশাল নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাফিক আইনকে পর্যন্ত অটোচালকরা তোয়াক্কা করছে না। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণাও নেই। তাই দুর্ঘটনা পিছু ছাড়ছে না। এসব দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণ ঝরে পড়ছে। পৌর শহরের হাজিপাড়ার বাসিন্দা নওশাদ আলী বলেন, ‘পৌর এলাকায় যারা অটোরিকশা চালায়, তাদের কোনো ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নেই। অনেকে ছিল দিনমজুর, কেউ সবজি বিক্রেতা। সড়কে কীভাবে রিকশা চালাতে হবে তাও জানে না। এতে প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। অটোরিকশার বিরুদ্ধে পৌরসভা প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
শহরের গোয়ালপাড়ার আরেক বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। অটোরিকশা সড়কের মধ্যে এমনভাবে চলাচল করে যে আতঙ্কে থাকতে হয়। দুর্ঘটনার আশঙ্কা মনে উঁকি দিয়ে ওঠে। অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে পৌর প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ পৌরবাসী বাবুল হোসেন নামে একজন বলেন, ‘শহরের ধারণক্ষমতা থাকে, কতটা যানবাহন ধারণ করতে পারবে। বৈধভাবে চলা ২ হাজার অটোরিকশা ঠাকরগাঁও পৌরসভা ধারণ করতে পারে কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তার ওপর অবৈধভাবে চলছে আরও ৮ হাজারের বেশি অটোরিকশা। অবৈধভাবে চলা সবকটি সড়ক থেকে তুলে দিতে হবে।’ পৌর শহরের কাপড় ব্যবসায়ী জনি রহমান বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও এখানে কোনো যানযট ছিল না। এত অটোরিকশা যে পা ফেলার জায়গা নেই। জরুরি কোনো কাজে বের হলে আপনি সময়মতো পৌঁছতে পারবেন না। পৌর প্রশাসন ইচ্ছে করেই অবৈধ যান চলাচল জিইয়ে রেখেছে।’
অটোরিকশার চালক বারেক আলী বলেন, ‘আমি পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে রিকশা চালাচ্ছি। নতুন নতুন কিছু অটোচালক আছে তারা জানে না গাড়ি কীভাবে চালাতে হয়। মূলত তাদের জন্য সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।’
ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রাহুল আহমেদ বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে। বৈধ ছাড়াও অসংখ্য অটোরিকশা অবৈধভাবে চলছে। পৌরসভা পারে অটোরিকশার জন্য স্ট্যান্ড করে দিতে। এতে যানজট কমে আসবে বলে মনে হয়।’ ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রশাসক সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘যানজট নিরসনের জন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। সেই সঙ্গে বৈধ অটোরিকশার জন্য স্ট্যান্ড করা হচ্ছে। অনুমোদনহীন যানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এগুলো পৌর এলাকায় চলতে পারবে না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *